মেহেরপুর জেলা
খুলনা বিভাগের অন্তর্গত
একটি প্রশাসনিক অঞ্চল মেহেরপুর। এটি বাংলাদেশের
সবচেয়ে ছোট জেলা। ক্ষুদ্র এ জেলাটির
পরতে পরতে লুকিয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ জেলাটিই যেন ছিল এক টুকরো বাংলাদেশ। জেলাটির উত্তরে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। দক্ষিণে চুয়াডাঙ্গা জেলা, পশ্চিমে
ভারতের পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, পূর্বে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা এবং চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলা। মেহেরপুর জেলাইয় তিনটি উপজেলা এবুং দুটি পৌরসভা রয়েছে। উপজেলাগুলো হল মেহেরপুর সদর, মুজিবনগর
এবং গাংনী। ক্ষুদ্র এ জেলাটির
আয়তন ৭৫১ বর্গ কিলোমিটার এবং ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী প্রতি বর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যার
ঘনত্ব ৮৭০ জন। মেহেরপুর জেলার
মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত তিনটি নদী হল, ভৈরব নদ, মাথাভাঙ্গা নদী এবং কাজলা নদী। এ জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ
তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আশেপাশে বড় কোন
নদী না থাকায় জেলাটিতে বৃষ্টিপাতের পরিমান একতু কম।
ইতিহাস ঐতিহ্য
মেহেরপুরের মুজিবনগর
বাঙ্গালী এবং বাংলাদেশের জন্য অন্যতম একটি আবেগের স্থান। মুজিবনগরের সাথে মিশে আছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সুচনালগ্নের
ইতিহাস। অস্থায়ী বাংলাদেশ
সরকার গঠনের পর রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম মুজিবনগর
রাখা হয়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস
থেকে দেখা যায় যায় যে যুদ্ধের প্রথম দিকেই বেশকিছু সম্মুখ যুদ্ধ সংঘটিত হয় এ অঞ্চলে। তাছাড়া শেষের দিকে বেশকিছু গেরিলা যুদ্ধও হয়েছিল।
মেহেরপুরের ইহিহাস অনেক
প্রাচীন হলেও ঠিক কখন এ অঞ্চলের গোড়াপত্তন হয় তা সঠিকভাবে জানা যায় না। সেন রাজা লক্ষনসেনের আমলে এ অঞ্চলটি নদীয়ার অধীনে ছিল। ১২০৪ সালে তুর্কি সেনাপতি ইখতিয়ারুদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার
খিলজি মাত্র ১৭ জন অশ্বারোহী সৈনিক নিয়ে অতর্কিত আক্রমন করে নদীয়া দখল করার এ অঞ্চলটি
মুসলিমদের নিইয়ন্ত্রনে আসে। কথিত আছে মেহের
আলী নামের একজন পীর ও সাধকের নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম মেহেরপুর রাখা হয়।
দর্শনীয় স্থান
ছোট্ট এ জেলাটিতে
বেশ কিছু দর্শনীয় ও ঐতিহ্যবাহী স্থান রয়েছে। মেহেরপুরের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে
সর্বপ্রথম যে স্থানটির নাম আসে তা হল মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ। এছাড়াও পৌর ঈদগাহ,
মেহেরপুর স্মৃতিসৌধ, সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, আমঝুপি নীলকুঠি, ভাটাপাড়া নীলকুঠি
নায়েব বাড়ি মন্দির ইত্যাদি।
যাতায়াত
সারা বাংলাদেশের
সাথেই মেহেরপুরে সড়কপথে যোগাযোগ রয়েছে। ঢাকার মহাখালী, সায়েদাবাদ ও গাবতলীতে
মেহেরপুরগামী বাস পাওয়া যায়। ছোট্ট এ জেলাটির অভ্যন্তরীন সড়কসমুহ খুবই সুন্দর এবং
পরিচ্ছন্ন।
0 Comments