গাইবান্ধা জেলা
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত রংপুর বিভাগের অন্তর্গত একটি
জেলা গাইবান্ধা। গাইবান্ধা জেলার আয়তন প্রায় ২১৮০ বর্গ কিলোমিটার এবং ২০১১ সালের
আদমশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১১০০ জন। গাইবান্ধার
উত্তরে কুড়িগ্রাম ও রংপুর জেলা, দক্ষিণে বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলা। পূর্বে জামালপুর
জেলা, তিস্তা ও যমুনা নদী এবং পশ্চিমে রংপুর, দিনাজপুর ও জইয়পুরহাট জেলা। সাতটি
উপজেলা নিয়ে গাইবান্ধা জেলা গঠিত। এগুলো হল গাইবান্ধা সদর, সাদুল্লাপুর, ফুলছড়ি,
গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী, সাঘাটা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা। বেশ কিছু নদ-নদী বয়ে গেছে
গাইবান্ধা জেলার উপর দিয়ে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হল ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা।
ইতিহাস ঐতিহ্য
১৯৭৭ সালে প্রকাশিত ‘গিওগ্রাফি অব বাংলাদেশ’ নামক বই থেকে
গাইবান্ধা জেলার প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে বেশ কিছু ধারনা পাওয়া যায়। গ্রন্থটিতে
উল্লেখ করা হয়েছে যে এ অঞ্চলের ভূপ্রকৃতির সাথে নদীর তলদেশের পলিগঠিত ভূমির বেশ
মিল পাওয়া যায়। এ থেকে ধারনা করা হয় এ অঞ্চলটি এক সময় পানিতে ঢাকা ছিল।
প্রাচীনকালের বিভিন্ন পর্যটকদের ভ্রমনকাহিনী ঘাটলে এর প্রমান পাওয়া যায়। হিউইয়েন
সঙীর ভ্রমন কাহিনী থেকেও জানা যায় যে এ অঞ্চল পার হওয়ার সময় তিনি একটি বড় নদী
অতিক্রম করেন। এ থেকে মোটামোটি স্পষ্ট যে এ এলাকাটি প্রাচীনকালে পানিতে ঢাকা ছিল।
বৃটিশ আমলে ফকির বিদড়হ এবং অন্যান্য ছোট খাট বিদ্রোহের সময়
আদনোলনকারীরা মূলত তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদীকে কেন্দ্র করেই আন্দোলন শক্তিশালী
করত। তাছাড়া সিপাহি বিল্পবের সময়ও এ অঞ্চলের উল্লেখ পাওয়া যায়। বাংলাদেশের
স্বাধীনতা যুদ্ধেও এ অঞ্চলের মানুষের ছিল সরব অংশগ্রহন।
গাইবান্ধা জেলার নামকরনের পেছনে একটি ইতিহাস রয়েছে। আজ থেকে
প্রায় ৫ হাজার বছর আগে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় বিরাট রাজার রাজধানী
ছিল বলে ধারনা করা হয়। তার প্রায় ৬০ হাজার গাভী ছিল যা তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর
তীরবর্তী এলাকায় বাধা হত। সেই থেকেই এ এলাকার নাম গাইবান্ধা হয়েছে বলে ধারনা করা
হয়।
দর্শনীয় স্থান
গাইবান্ধা জেলায় বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এগুলোর
মধ্যে অন্যতম হল সাদুল্লাপুর উপজেলার বড় জামালপুর গ্রামে অবস্থিত জামালপুর শাহী
মসজিদ, সদর উপজেলায় অবস্থিত এসকেকেএস ইন রিসোর্ট। ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার,
ড্রিমল্যান্ড এডুকেশন পার্ক, গাইবান্ধা পৌর পার্ক ইত্যাদি।
যাতায়াত
ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে রংপুর এক্সপ্রেস এবং লালমনি
এক্সপ্রে ট্রেনে গাইবান্ধা যাওযা যায়। এছারা ঢাকার প্রায় সবগুলো বাস টার্মিনালেই
গাইবান্ধাগামী এসি ও নন এসি বাস পাওয়া যায়। অভ্যন্তরীন যোগাযোগের জন্য লোকাল বাস,
রিক্সা এবং ইজিবাইক রয়েছে।
0 Comments